এইকাল নিউজ: ‘কাঁচরাপাড়ায় একটা মুকুল রায় গোটা তৃণমূলকে তছনছ করে দিল৷ওই কাঁচা ছেলেটাই’ চাণক্যর বুদ্ধিতে গোটা বাংলায় চষে বেড়াল৷’ শুক্রবার এই ভাষাতেই বাবা মুকুল রায়ের অপমানের জবাব দিলেন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়৷
এদিন দলের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। অভিযোগ করেন, তৃণমূলের নেতারা তাঁকে বিশ্বাস করেন না৷ ‘গদ্দারের ছেলে’ বলে তাঁর সমালোচনা করেছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী৷ যা আঘাত দিয়েছে তাঁকে৷ তবে দল ছাড়বেন কিনা সে বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করেননি।
তিনি বলেন, ‘‘এখনই আমি দল ছাড়ছি না, তবে দল কি আমাকে বিশ্বাস করে?’’
ব্যারাকপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী বীজপুরে লিড না পাওয়ার দায় নেন শুভ্রাংশু৷ সাংবাদিক বৈঠকে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘আমি হেরে গিয়েছি৷ আমি আমার বাবার কাছে হেরে গিয়েছি৷ আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে, আমি যেমন বীজপুরের ভূমিপুত্র, তেমন মুকুল রায়ও বীজপুরের ভূমিপুত্র৷ বীজপুরের মানুষ আমাকে নয়, বাবাকে বেছে নিয়েছেন৷’’ এরপরই তাঁর বর্তমান দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও এদিন একগুচ্ছ ক্ষোভ উগরে দেন বীজপুরের বিধায়ক৷ নাম না করে তৃণমূল নেত্রীর সমালোচনা করে বলেন, ‘‘আমি দলের জন্য একশো শতাংশ করেছি৷ কিন্তু শেষদিনের প্রচারেও মমতাময়ী নেত্রী আমাকে গদ্দারের ছেলে বলেছেন৷ যা খুব খারাপ লেগেছে৷’’
শুভ্রাংশুর এই সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়কে ছ’বছরের জন্য নির্বাসিত করল তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেন। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শুভ্রাংশু যা কাজ করছেন, বা যা মন্তব্য করছেন তা দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে৷ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে৷ সেকারণেই তাঁকে নির্বাসিত করা হয়েছে৷ তবে এদিন সাসপেন্ড হবার পর বীজপুরের দুবারের বিধায়ক এলাকার উন্নয়নের কান্ডারী বলেন, আমি দল থেকে নিজে বেরোতে চাইনি। দল আমাকে জোর করে বের করে দিল। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শুভ্রাংশু। নাম না করে পার্থবাবুকে তাঁর প্রশ্ন, যিনি আমাকে সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, তাঁর দায়িত্বে যে সব এলাকা ছিল সেখানেও তো হেরেছে দল। তাঁর কাছে জবাবদিহি চাওয়া হবে তো? অভিমানী বিধায়ক পরিস্কার বলেছেন আজ রাতের পর বীজপুরে কোনো তৃণমূলের ক্লাব থাকবেনা। পাশাপাশি তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেন, খুব শীঘ্র বীজপুরে শান্তি ফিরবে। এদিন শুভ্রাংশু বলেন, অনেকদিন পর খোলা হাওয়ায় ঘুরব। তৃণমূল নেতাদের সন্দেহের জেরে যে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার থেকে মুক্তি পেলাম। এই দলে কিছু করলেও দোষ, না করলেও দোষ। এই দলে শুধু মারদাঙ্গা, আর মানুষকে ছোট করা। এছাড়া তৃণমূলে আর কিছু নেই।