নতুন নগরপাল (পুলিশ কমিশনার) মনোজ ভার্মা ও ডিসি জোন – ১ অজয় ঠাকুরের তৎপরতায় ভাটপাড়ার পরিবেশ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদ দিলে শান্তি ফিরেছে বলা যায়। খুলেছে দোকানপাট। স্কুলে বেড়েছে পড়ুয়াদের হাজিরা। রাস্তায় দেখা মিলছে পথ চলতি সাধারণ মানুষের। পুলিশের উপর আস্থা ফিরেছে সাধারণ মানুষের। তবে পরিবেশ এখনও থমথমে। অশান্তির ছাই চাপা আগুন যে যে কোনও সময়ে ফের জ্বলে উঠবে না, নিশ্চিত করে তা বলতে পারছেন না কেউই। আর তাই এলাকায় জনসংযোগ জারি রাখতে বদ্ধপরিকর ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। তারই অন্যতম প্রক্রিয়া হিসেবে এবার ফুটবলে বিশেষ গুরুত্ব দিল ব্যারাকপুর পুলিশ। পুলিশ কমিশনার (সিপি ) মনোজ ভার্মা জানালেন, খুব শীঘ্রই ভাটপাড়া এলাকার ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী ছেলেদের নিয়ে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে। টুর্নামেন্ট থেকে বেছে নেওয়া হবে সম্ভাবনাময়দের। তারপর রাজ্যের বিভিন্ন নামী ক্রীড়া সংস্থায় প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পর তাদের পাঠানো হবে জার্মানিতে। প্রাথমিক ভাবে এই ফুটবল টুর্নামেন্টের খরচ বহন করবে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। পরবর্তীকালে সম্ভাবনাময় বালকদের ফুটবলের প্রশিক্ষণ ও জার্মানিতে পাঠানোর ব্যায়ভারের কিছু অংশ কমিশনারেট দেবে। বাকিটা দেবে সংশ্লিষ্ট ফুটবল প্রশিক্ষণ সংস্থা। আর এভাবে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের জনসংযোগ আরও দৃঢ় হবে বলেই মনে করেন নগরপাল।জনসংযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি গুজব ছড়ানো নিয়ে ভাটপাড়াবাসীর মধ্যে সচেতনা গড়ে তুলতে উদ্যোগী ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। সিপি মনোজ ভার্মা বলেন , কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ উদ্দ্যেশ্যপ্রাণোদিতভাবে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে চলেছে। এক্ষেত্রে তারা হাতিয়ার করছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াকে। সম্প্রতি এরকম গুজবে এলাকার উত্তেজনা ছড়ায়। রটে গিয়েছিল স্থানীয় একটি হাইস্কুলের পিছনে নাকি এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সেই খবর চাউর হয়ে যায় নিমেষে। এমনকি ছড়ানো হয় একটি ভুয়ো ভিডিও। যদিও পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। নগরাপাল মনোজ ভার্মার কড়া হুশিয়ারি, এই ধরনের গুজব ছড়ানো বন্ধ করুন। অন্যথায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাটপাড়াবাসীর প্রতি তার আবেদন, আপনারা গুজবে কান দেবেন না। এলাকায় কোনও অশান্তির খবর পেলে পুলিশের হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিড়িয়ায় ছড়ানো কোনও খবর যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। পুলিশ আপনাদের পাশে রয়েছে। পাশাপাশি যে কোন সমস্যায় পুলিশের হেল্পলাইনে ফোন করে জানানোর আবেদনও করেছেন তিনি। মনোজ ভার্মা বলেন, ইতিমধ্যে পুলিশকে বন্ধু ভাবতে শুরু করেছে ভাটপাড়াবাসী। হেল্পলাইনে ফোন করে বিভিন্ন খবরও দিচ্ছে।উল্লেখ্য, লোকসভা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে অশান্ত ভাটপাড়াকে শান্ত করতে নগরপাল মনোজ ভার্মার পাশাপাশি বিশেষ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে ডিসি জোন – ১ অজয় ঠাকুরকেও। এক শ্রেণীর ‘প্ররোচনায়’ বারবার ‘গো-ব্যাক’ স্লোগানের মুখোমুখি হয়েও পিছু হঠেননি দুঁদে পুলিশ অফিসার অজয় ঠাকুর। মনোজ ভার্মা ও অজয় ঠাকুরের যৌথ নেতৃত্বে এলাকায় দফায় দফায় হয়েছে শান্তি বৈঠক। যাতে সাড়াও মিলেছে। তবে অশান্ত ভাটপাড়ায় শান্তি ফেরাতে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ অধিকারিকের সদর্থক ভূমিকা রয়েছে বলে জানালেন সিপি মনোজ ভার্মা।