Breaking
18 Apr 2025, Fri

করোনা সংক্রমন রুখতে তৎপর পুলিশ ও প্রশাসন, সচেতনতার প্রচারে বিধায়ক পার্থ

শোভনলাল রাহা,এইকাল নিউজ: করোনা মোকাবিলায় আপসহীন রাজ্য সরকার । এবার তাই আর শুধু বড় শহর বা পুর এলাকাগুলিতে নয়, রাজ্যজুড়েই লকডাউন ঘোষণা করা হল। লকডাউনের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। জরুরি এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনমজুরদের জন্যে নতুন প্রকল্প ‘প্রচেষ্টা’র কথা ঘোষনা করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে দিন মজুরদের মাসে এক হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে করোনার সংক্রমণ রুখতে বদ্ধপরিকর পুলিশ-প্রশাসন।
সেইমতোই নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সনৎ দে , স্থানীয় হাসপাতাল সুপার ও নৈহাটি থানার আইসি শুভ্রজিৎ মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় বৈঠক করেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ।

Advertisement

সমাজের একটা বড় অংশের মধ্যেই এখনও গড়ে ওঠেনি সচেতনতা। আর এটাই আশঙ্কার কথা। পাড়ায় পাড়ায় অসচেতন অধিকাংশ মানুষই মনে করছেন,
১.মাক্স বা কাপড় মুখে নিলে কোনো ভাবেই ভাইরাস অ্যাটাক করতে পাড়বে না।
২.রাজ্য বা দেশের বাইরে থেকে যে এসেছে তার বাড়ির লোক কোনও ভাবেই মানবে না তার শরীরে কীভাবে ভাইরাস অ্যাটাক হতে পারে ,তাই তার মেডিকেল পরীক্ষা বা ঘরে থাকার কোনও কারন নেই বলেই তারা মনে করছেন।
৩.যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ এর ভিতর তাদের এই ভাইরাস কিছু করতে পারবে না।
৪.চা এর দোকান এ একসঙ্গে ৭ জন এর বেশি হলে ভাইরাস অ্যাটাক করতে পারে,৬ জন হলে কোনো সমস্যা নেই।
৫.সেলুন ৫টা পর্যন্ত আজ খোলা রাখা যাবে তাতে কোনও সমস্যা নেই।
৫. চারজন পাড়ার লোক তাস খেলা যেতে পারে তাতে কি অসুবিধা হতে পারে!
৬.টোটোতে একসঙ্গে বেশি লোক না ওঠালেই আর সমস্যা নেই।
৭.আমার হলে আমার হবে তোদের কি অসুবিধা!
এই ভ্রান্ত ধারণাগুলিতেই সমস্যা আরও বেড়েছে। সমাজসেবী ও রাজনৈতিক নেতারা বহু চেষ্টা করেও এঁদের বোঝাতে অক্ষম। তাঁরা বারবার বোঝাবার চেষ্টা করছেন এর মারাত্মক পরিণতি পরিবারকে শেষ করে দিতে পারে। কিন্তু কে শোনে কার কথা!
এবার রাজ্যে করোনা ভাইরাসকে ঠেকাতে তাই লাঠিই একমাত্র ভরসা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কারণ বেশ কয়েকদিন ধরে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের নোয়াপাড়া থানার পুলিশ ওই থানার আইসি ও সেকেন্ড অফিসারের নেতৃত্বে অভিনব উপায় উদ্ভাবন করে ব্যাংক থেকে শুরু করে থানায় আসা বাসিন্দাদের সচেতন করার ধারাবাহিক উদ্যোগ নিয়েছেন। সন্দেহ নেই এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু কিছু মানুষ এর অসচেতনতার দাওয়াই পুলিশের লাঠি এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারন,অসচেতন মানুষের কাছে লকডাউন মানে, মদ মোচ্ছব। লকডাউন মানে, বাইক হাঁকিয়ে পাড়ার মোড়ে জটলা করা। লকডাউন মানে, চায়ের ঠেকে কলার তুলে আড্ডা মারা।
লকডাউন এর প্ৰকৃত অর্থ বোঝানোর এই মুহূর্তে সেরা উপায় তাই পুলিশের লাঠি। আর সেই রাস্তাতেই বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে বীজপুর, নৈহাটি-সহ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের প্রায় সব থানাকেই।
কারন,মানুষ ভাবছেন ছুটি কাটাচ্ছেন।বাজারে গিয়ে রোজের বাজার রোজ করছেন।
বিশ্ব এতবড় একটা মারন রোগের সঙ্গে লড়ছে,সেটা বোঝাতে হচ্ছে পুলিশকে।
বাজার করা, ঔষধ কেনার অজুহাতে মাস্ক পড়ে যত্রতত্র গাড়ি নিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন অসচেতন নাগরিক। কিছু মানুষ আবার পকেটে একটা প্রেস্কিপশন নিয়ে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টাও করছেন।
এমত অবস্থার সামাল দিতে হচ্ছে পুলিশকে। কিন্তু ফাঁকি দিলে যে নিজেরাই ফাঁকে পড়বেন সেকথা আর কবে বুঝবেন তাঁরা।
পুলিশ বন্ধুদের সাধুবাদ জানিয়েছে রাজনৈতিক নেতারাও। তাঁরা সব কিছু উপেক্ষা করে নিজেদের কথা না ভেবে যেভাবে মানুষের জন্য কাজ করছেন তাদের ভূমিকার প্রশংসা সত্যিই প্রাপ্য বলেই মত সচেতন নাগরিকদের।

Developed by