এইকাল নিউজ: মৃত্যু হল ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের চারবারের বিধায়ক বাদল জমাদারের। শনিবার রাত ৯.৩০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০১১ সালে ভাঙড় কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সিপিএম বিধায়ক নিযুক্ত হন তিনি। আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী ও সাচ্চা কমিউনিস্ট বলে তাঁকে সকলে একবাক্যে চেনেন। পেশায় শিক্ষক এই মানুষটির সাদা ধূতি ও পাঞ্জাবীতে কখনওই তাঁর রাজনৈতিক জীবন কালিমালিপ্ত করতে পারেনি। মিলিয়ে ফেলেননি শিক্ষকতা ও রাজনৈতিক জীবনকে।
দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার জেলার অবিভক্ত ভাঙড় বা বর্তমানে কাশিপুর থানার কাশিপুরে বসবাস করতেন তিনি। অনাড়ম্বর জীবন-যাপন আর সততাই ছিল তাঁর জীবনের মূলমন্ত্র।
তিনি ছিলেন পোলেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এখানে তিনি কবি ও লেখক আবদুর রব খানের সহকর্মী ছিলেন। এক স্মৃতিচারণায় আবদুর রব খান বললেন, ‘জীবনে কারও কাছে কিছু চাননি। আর কেউ কিছু দিলেও সহজে নিতে চাইতেন না। এমনকী তাঁর স্কুলের সহকর্মীদের আয়োজন করা বিদায় অনুষ্ঠানেও তিনি হাজির হননি। সেজন্য সহকর্মীগণ তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে বিদায় সম্বর্ধনা জানিয়ে আসেন।’
বাবরি মসজিদ ভাঙার পর কাশিপুরে একদল মানুষ চক্রান্তে পড়ে একটি মন্দির ভাঙতে গেলে সেদিন বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি সেই অপচেষ্টা রুখে দিয়ে সকল মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেন।
দলমত নির্বিশেষে সব মানুষ ও তাঁর ছাত্ররা আজ গভীর শোক প্রকাশ করছেন। তাঁর ছাত্র মহম্মদ আবেদ আলি জানান, ‘বাদল জমাদার স্যার ছিলেন সবার কাছে আদর্শ শিক্ষক। এমএলএ থাকার সময় ২০০১ সালে ছেলেকে কলেজে ভর্তি করার সময়ে স্যার অধ্যক্ষকে চিঠি লিখে দিলেন। তিন বছর বিনা বেতনে কলেজ জীবন শেষ করে ছেলে চাকরি পান।’
এই লক-ডাউন পরিস্থিতিতেও বহু মানুষ দূরত্বের নিয়ম মেনে তার জানাযায় উপস্থিত হন। তাঁর বাসভূমি সংলগ্ন নিজস্ব গোরস্থানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে।
এই পর্বে সারা ভারত কৃষক সভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি সম্পাদক তুষার ঘোষ সহ তাঁর বহু রাজনৈতিক সহকর্মী ও অনুগামী উপস্থিত ছিলেন।