এইকাল নিউজঃ
ঋষি কাপুর তখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালের বেডে। অসুস্থ ক্যান্সারে আক্রান্ত ঋষির হঠাৎই মনটা হয়ত ভারাক্রান্ত হয়। তিনি হাসপাতালেরই এক ডাক্তারকে ডেকে তাঁরই ব্লকব্লাস্টার হিট ছবির ক্লাইমেক্সের একটি কালজয়ী sad সং শুনতে চান। হ্যা গানটি ছবিতে গেয়েছিলেন মেলোডি কিং, এবং বিরহের গানের বেতাজ বাদশা লিভিং লিজেন্ড পদ্মশ্রী কুমার শানু।
ছবিতে ওই গানটি ক্লাইমেক্সে ব্যবহৃত হয়েছিল। এই গানটির পরই ছবিতে ঋষি মারা যান।
মিলেগেল রিলের সাথে রিয়ালের ক্লাইমেক্স।
গানটি শুনতে শুনতে হাসপাতালের বেড়ে শুয়েই ঋষির দুচোখ বেয়ে পড়ে জল।
এর পরের ইতিহাস সবাই জানেন। জীবনযুদ্ধে হেরে পরলোকে পাড়ি দেন ঋষি কাপুর।
কুমার শানুর গাওয়া দিবানার কালজয়ী গানগুলো বরাবরই ঋষির ভীষন প্রিয়। বহুবার তা ইন্টারভিউতে বলেওছিলেন ঋষি। অন্যদিকে কুমার শানু নিজে বলেছেন অমিতাভ থেকে ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খান্না থেকে দেবানন্দ, বিনোদ খান্না থেকে মিঠুন, জিতেন্দ্র থেকে গোবিন্দা, কিংবা নয়ের দশকের তিন খান, সহ অভিষেক, ঋত্বিক, এমনকি এই জেনারেশনের আয়ুসমান খুরানা সবার লিপেই সুপার হিট প্লেব্যাক করলেও তাঁর বিচারে ঋষি কাপুরই তাঁর গানে অন্যতম সেরা লিপ দিতেন। তা সে বোল রাধা বোল বা দামিনী হোক, কিংবা দিবানা।
সেদিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা অসুস্থ ঋষিকে ওই চিকিৎসক তাঁর ‘দিওয়ানা’ ছবির গান গেয়ে শোনান। ওই চিকিৎসককে আশীর্বাদও করেন কিংবদন্তি অভিনেতা। বলেন, ”আমার আশীর্বাদ তোমার সঙ্গে রইল, খুব নাম করো, সফল হও। তবে মনে রেখো, পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম ছাড়া সফল হওয়া যায় না। বেশি পরিশ্রম আর অল্প ভাগ্যের সহায়তাই মানুষকে সফলতা এনে দেয়।”
তবে ভিডিয়োটি যে সময়েরই হোক না কেন, অসুস্থ অবস্থাতেও এভাবেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন ঋষি কাপুর।
”তেরে দরদ সে দিল আবাদ রহা”, দিওয়ানা ছবির যে গানটি ঋষি কাপুরকে ওই চিকিৎসক শোনাচ্ছিলেন, সেটি ‘দিওয়ানা’ ছবির। যে ছবিতে শাহরুখ, দিব্যা ও ঋষি কাপুর অভিনয় করেন। ছবির পরিচালক ছিলেন ঋষি কাপুরের বাবা, কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ কাপুর। প্রসঙ্গত, বুধবার মুম্বইয়ের যে হাসপাতালে ঋষি কাপুর ভর্তি হয়েছিলেন, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানিয়েছেন, শেষপর্যন্ত তাঁদেরকে হাসানোর চেষ্টা করছিলেন অভিনেতা। আর এইভাবে হাসতে হাসতেই কখন যে মৃত্যু এসে কেড়ে নিল এই লিজেন্ড অভিনেতাকে তা এখনও অবিশ্বাস্য লাগছে ঋষির সান্নিধ্য পাওয়া ওই তরুণ ডাক্তারের।