এইকাল নিউজ
: ‘কথা রাখুন মুখ্যমন্ত্রী।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে এই দাবি জানালেন বীজপুরের বিজেপি বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। কাঁচরাপাড়ায় প্রস্তাবিত পলিটেকনিক কলেজের বাস্তবায়নের দাবিতেই তাঁর এই চিঠি।
গত ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সবচেয়ে বেশি ভোটে জয়ী বিধায়ক জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ছি। আমি লিখেছি যে, আপনি কথা দিয়েছিলেন, আমার এলাকায় একটা পলিটেকনিক কলেজ হবে। সেই কলেজের জমিও পর্যন্ত দেখে, তার প্রশাসনিক যে কাজ সেটাও আমরা করে দিয়েছি। তার পরেও কেন পলিটেকনিক কলেজটা হচ্ছে না? আমার দাবি, প্রস্তাবিত এই কলেজের বাস্তবায়ন হোক।’
শুভ্রাংশু সাফ জানান, তাঁর একমাত্র ফোকাস এলাকার উন্নয়নে। বলেন, ‘কলেজটা হলে আমি বা মুখ্যমন্ত্রী কেউই সেটা নিজের বাড়ি নিয়ে যাব না। কিন্তু কলেজটা হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। আমি চাই উন্নয়ন। আমি অন্য দল দেখি না, আমি মানুষ দেখি না, কোন্দল দেখি না। আমি চাই বীজপুর এর উন্নয়ন হোক, বীজপুরের সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হোক, কর্মসংস্থান হোক।’
তিনি আশাবাদী, মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাঁর চিঠির উত্তর দেবেন। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এখন করোনা মহামারী, আমফান নিয়ে ভীষণই ব্যস্ত, এসব সামলে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই আমার চিঠির উত্তর দিয়ে সৌজন্য রক্ষা করবেন।’
নিজেও বরাবরই সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী কাঁচরাপাড়া ঘটক রোডের এই মেধাবী ছাত্র। যখন তৃণমূলে ছিলেন, বা পরে যখন বিজেপিতে যোগ দেন, কোনও দিনই তাঁকে সৌজন্য ভাঙতে দেখা যায়নি। ব্যক্তি আক্রমন তাঁর না-পসন্দ। তাই সম্প্রতি হালিশহরের পুরপ্রশাসক পদ থেকে অংশুমান রায়ের পদত্যাগ নিয়েও তিনি নীরব। প্রশ্ন করা হলে বিধায়ক বলেন, ‘এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কেন, কী কারণে তিনি পদত্যাগ করলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, হালিশহর পুরসভায় যে উন্নয়ন এর গতি, কাজের গতি ছিল, বিগত তিন-চার বছর ধরে সেটা স্তব্ধ হয়েছে। যদি সেই কারণে উনি পদত্যাগ করে থাকেন, তাহলে উনি সঠিক কাজই করেছেন। এটা আরও আগেই করা উচিত ছিল।’
শুভ্রাংশুর প্রশ্ন, হালিশহর-কাঁচরাপাড়ার উন্নয়ন কি হচ্ছে? সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞেস করুন। আমি বারবার চিঠি করেছি প্রশাসনের কাছে। কাঁচরাপাড়া ও হালিশহর পুরসভার দুই চ্যেয়ারম্যানকেই চিঠি করেছি আগের বছররও। এখন তো কেউ চ্যেয়ারম্যান নেই। আমার একটাই দাবি, নতুন করে উন্নয়ন না হোক, অন্তত যে উন্নয়নগুলো করা হয়েছে, সেগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হোক। সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
দলীয় বিধায়ক থাকাকালীন বরাবরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে এসেছেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু। এমনকী অসুস্থ শুভ্রাংশুকে দেখতে দলীয় কর্মসূচি বাতিল করে হাসপাতালে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। এখন শুভ্রাংশু আর দলে নেই। তাঁর চিঠির উত্তর কি দেবেন মমতা? গতি পাবে কি কাঁচরাপাড়া পলিটেকনিক কলেজের কাজ? আপাতত সেদিকেই নজর বীজপুরবাসীর।