Breaking
11 Apr 2025, Fri

এইকাল নিউজ:

বিশ্বভারতীর পাঁচিল বিতর্কে উত্তপ্ত রাজ্য। এর আঁচ পড়েছে রাজনীতিতেও। বলা ভালো, বিশ্বকবির ঐতিহ্যের বিশ্বভারতীর পাঁচিল ভেঙে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের এই ঘটনায় ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন রাজনীতির কারবারিরা। আর সামগ্রিক এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠল নৈহাটির বুদ্ধিজীবী মহল। ২৬ আগস্ট, বুধবার সন্ধ্যায় নৈহাটির ঐকতান প্রেক্ষাগৃহে অরাজনৈতিক প্রতিবাদসভায় ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁরা।

Advertisement

বঙ্কিম ভবন গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ এবং ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎয়ের সম্পাদক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. রতনকুমার নন্দী এই প্রতিবাদ সভার সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই রতনবাবু এই সভার কারণ ব্যাখ্যা করেন। এই প্রতিবাদ সভায় একাধারে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক, কবি, চিত্রকর, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, নাট্য ব্যক্তিত্ব, নৃত্যশিল্পী, সমাজসেবী-সহ সমস্ত মহলের মানুষজন। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়, চলে রাত ন’টা পর্যন্ত।

সভাপতি রতনকুমার নন্দী বলেন, ‘জীবনের সার্বিক বিকাশের সঙ্গে শিক্ষা বিজড়িত বিশ্বভারতীর এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে প্রাকিতিক পরিবেশ ও সনাতন ভারতীয় মূল্যবোধের সমন্বয়ে মানব চরিত্রের সার্বিক বিকাশের সঙ্গে বিশ্বভারতীর কর্মদ্যোগ জড়িত। একটি চার দেওয়ালের শিক্ষায়তনে শিক্ষাকে গণ্ডিবদ্ধ করার প্রয়াসকে কখনওই গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ সমর্থন করতেন না। তিনি আধুনিক শিক্ষা ভাবনার সাথে কর্মশিক্ষাকে সমন্বিত করে মানুষকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও স্বনির্ভর করতে চেয়েছিলেন। তাঁর এই মহৎ ভাবনার ফলেই গড়ে উঠেছে শ্রীনিকেতন। যার ফলে বাংলা শিল্পচর্চায় শান্তিনিকেতনী শব্দটি ওতেপ্রাত ভাবে জড়িয়ে আছে।’ ড. নন্দী আরও জানান, আগামী দিনে নৈহাটিতে স্ব- স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত মানুষদের নিয়ে তৈরি হতে চলেছে নৈহাটি সাংস্কৃতিক সমন্বয় সমিতি।

এইকাল পত্রিকার সম্পাদক তথা বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর লাইফ মেম্বার শিক্ষক শোভনলাল রাহার বক্তব্যে উঠে আসে বাঙালির গৌরবের কথা। হরপ্রসাদ, বঙ্কিমচন্দ্র থেকে সঙ্গীতজ্ঞ শ্যামল মিত্র, ব্যারিস্টার পি মিত্ররা সকলেই যে নৈহাটির কৃতি সেকথা স্মরণ করান তিনি। তাই রাজ্যজুড়ে গর্বের নৈহাটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। রবীন্দ্রনাথের মুক্ত পরিবেশে বিদ্যাচর্চার ভাবনার ওপর যে আঘাত এসেছে, তার বিরোধিতায় সরব হন। এদিন তিনি সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অভয়চরণ দে’র স্মৃতিতে শোক প্রকাশ করে তাঁকে ‘নৈহাটির বিদ্যাসাগর’ আখ্যা দেন। অভয়বাবুর স্মৃতিতে আগামী ২o সেপ্টেম্বর একটি স্মরণসভা আয়োজনের কথাও ঘোষণা করেন।এদিনের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সুনীতি মালাকার, আয়ুব আলি, নৈহাটি ব্রাত্যজন-এর অন্যতম কর্ণধার নাট্যকর্মী অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রফেসর অমল মজুমদার, বিশিষ্ট শিক্ষক অনির্বাণ ভট্টাচার্য, আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ রাজা চট্টোপাধ্যায়, নূতন ভৌমিক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক উজ্জ্বল গোস্বামী, বিশিষ্ট সমাজসেবী কল্লোলদে বিশ্বাস, নৈহাটি নৃত্য সমন্বয়-এর চন্দ্রাণী গঙ্গোপাধ্যায়, অরুন্ধতী ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট বঙ্কিম গবেষক পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

Developed by