Breaking
18 Apr 2025, Fri

মূলধারার ভারতীয় গানে ব্যতিক্রমী আলাপ কুমার শানুর স্বকীয় আবিষ্কার লিখছেন তারকনাথ দত্ত

যে কোন ঘরাণার গানের ক্ষেত্রে ‘আলাপ’ শব্দটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। আমি তথাকথিত সংগীত বোদ্ধাদের কথা বলছি না। আমার মত যারা সাধারণ শ্রোতা তাদের ‘আলাপ’ শব্দটি নিয়ে জিজ্ঞাসা থাকতেই পারে।
আলাপ নিয়ে কথা শুরুর আগে সংগীত বিষয়ে দু-চারটে কথা বলে নেওয়াটা বোধহয় জরুরি।
সংগীত কী? খুব সহজ ভাবে বললে চিত্ত বিনোদনে সমর্থ স্বরসমূহের বিন্যাসের মাধ্যমে বিচিত্র ও মধুর রচনাই হলো সংগীত। একটু ঘুরিয়ে বললে, স্বর ও তালবদ্ধ মনোরঞ্জক রচনাকেই সংগীত বলা হয়। সংগীতের পরিভাষা অনুসারে গীত,বাদ্য ও নৃত্য এই তিনের একত্রে সমাবেশ হলো সংগীত। যদিও গীত, বাদ্য ও নৃত্যের আলাদা সংজ্ঞা আছে। আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু প্রথমটি অর্থাৎ ‘গীত’ নিয়ে। কথা সুর আর তালের মেলবন্ধন হলো গীত। কণ্ঠসঙ্গীতে আলাপের যথেষ্ট সুযোগ আছে। সুযোগ বললে ভুল হবে। আলাপের একটি রীতি ও নিয়ম আছে। তার কারণ আলাপ শব্দটির একটি সাধারণ অর্থই হল পরিচয়। অর্থাৎ রাগের পরিচয় বা রাগ সম্পর্কে যে জানান দেওয়া সেটির প্রথম কাজ আলাপই করে।
এখন প্রশ্ন হলো, আলাপ কাকে বলে?
আলাপ। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে, কোনো বন্দিশ (স্থায়ী, অন্তরা) গাওয়া বা বাজানোর পূর্বে, বিভিন্ন স্বরের বিচরণ করার দ্বারা, রাগের রূপ প্রকাশ করার যে পদ্ধতি, তাকে আলাপ বলা হয়।
আলাপের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আলাপ কোনো তালে নিবদ্ধ থাকে না। আলাপের লয় বা গতি সাধারণত বিলম্বিত হয় এবং তালের মতো মাত্রাভিত্তিক হয় না। অর্থাৎ তালের গতির বাধ্যবাধকতার মধ্যে না থেকেই, রাগের আলাপ করা হয়, তাকে রাগের বিস্তার ও বলা হয়।
সাধারণত গানের ক্ষেত্রে, আলাপে কোনো শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করা হয় না। কিছু ধ্বনি যথা, আ, এ, রি, তোম, নোম ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
আবার ব্যকরণগত ভাবে যদি এর ব্যাখা করার চেষ্টা করি তাহলে বিষয়টা দাঁড়ায় এইরকম—
আলাপ/বিশেষ্য পদ/সম্ভাষণ, কথাবার্তা; গানের সুর ভাঁজা; পরিচয়। /আ+লপ্‌+অ/।
গানের মাহাত্ম্য বোঝার ক্ষেত্রে আলাপের ভূমিকা অপরিসীম। তবে প্রতিটি গানের ক্ষেত্রে আলাপ থাকাটা বাধ্যতামূলক নয়।

Advertisement

কিশোর কুমার ও তাঁর বিখ্যাত হুডলিং/কুমার শানুর আলাপ
“””””””””‘””””””””””””'””””””””””‘”””””””””””””””””””””
কিশোর কুমারের বিখ্যাত ‘হুডলিং’ নিয়ে বহু মানুষ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তার একটা বড় কারণ এই কাজটি করার ক্ষেত্রে ওনার দক্ষতা ছিল সীমাহীন। ওনার আগে ‘হুডলিং’ নিয়ে কেউ তেমন আগ্রহ দেখায়নি। এটাও যে গানের একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হতে পারে, এই ধারণা তাদের ছিল না।
কিশোর কুমারকে অনুসরণ করে গানের জগতে পা রাখলেও কুমার শানু কখনই কিশোর কুমারের ক্লোন হতে চাননি। এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটা তিনি নিজ মুখেই একাধিক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন। তিনি না বললেও ইতিহাস সাক্ষী, তিনি কিশোর কুমারের গান গেয়ে নয়, নিজের গান গেয়েই একদা শানু ভট্রাচার্য থেকে ‘কুমার শানু’ হয়ে উঠেছেন। আজ তাঁর যা কিছু পরিচিতি, নিজের যোগ্যতা বলে, অন্যের দয়া দাক্ষিণ্যে নয়। টুকলি করে কোনরকমে পাস হয়ত করা যায়, প্রথম হওয়া যায় না। তা যে বিষয়টা নিয়ে কথা হচ্ছিল, কিশোর কুমার যদি গানের মধ্যে ‘হুডলিং’ নিয়ে আসার জন্য বিখ্যাত হয়ে থাকেন, (যদিও সরাসরি হুডলিংয়ের জনক তাঁকে বলা যাবে না। পাশ্চাত্য সংগীতে এর ব্যবহার বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে। কিশোর কুমার সেই ব্যপারটাকেই সুনিপুন দক্ষতায় নিজের গানে অব্যর্থ প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন মাত্র। মূলত তার হাত ধরেই ‘হুডলিং’ এদেশে বিরাট জনপ্রিয়তা লাভ করে।) তো সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে কুমার শানুও গানে ‘হে…হে…হে…হা…হা… হা…’ আনার কারিগর। সেই অর্থে এটাই ওনার সিগনেচার টিউন। এবং অবশ্যই এটা ওনার নিজস্ব সংযোজন। অনেকের কাছে এটা হয়ত নেহাতই মামুলি একটা বিষয়। বলতে পারেন, এ আর এমন কী? তারা এই ছোট্ট বিষয়টাকে পাত্তা না-ই দিতে পারেন; কিন্তু ঘটনা হলো, এই মামুলি বিষয়টাকেই তিনি প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। আজ আমরা তাঁর গাওয়া সেইরকমই কিছু ‘আলাপ’ সমৃদ্ধ গান নিয়ে আলোচনা করব।

যশ রাজের ছবিতে লতা মঙ্গেশকরের পরিবর্তে কুমার শানুর আলাপ
“”””””””””””””””””””””””””””””””'””””””””””‘””””””””‘”‘
শুরুটা করব তাঁর সাম্প্রতিক কালের সবচে’ হিট ছবি ‘দম লাগাকে হাইশা (২০১৫) দিয়ে। এই ছবির গানকে শুরুতে রাখার যথেষ্ট কারণ আছে।
যশ রাজের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য তাদের যে কোন ছবির শুরুতে পর্দায় যশ রাজের লোগো আসার সাথে সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে কোকিল কণ্ঠি তথা জীবন্ত কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকরের আলাপ শোনা যায়। দস্তুর মত এতদিন এটাই হয়ে এসেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো ‘দম লাগাকে হাইশা’ ছবিতে তারা তাদের দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠের পরিবর্তন করে কুমার শানুর—

হে…হে…হে…
হে…হে…হে…হে…
হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…
আ…হা..হা…হা…

এই আলাপটি ব্যবহার করলেন। খবরটা নিউজে আসা মাত্রই এক শ্রেণীর মানুষ ভ্রু কুঁচকে ছিলেন। ‘গেল গেল’ করে তারা রীতিমত চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দিয়েছিলেন। বলা হচ্ছিল, এটা নাকি এক অর্থে সুপরিকল্পিত ‘নীল হত্যা’। যদিও ছবির নির্মাতারা এই বিষয়ে তাদের মতামত স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। এর সপক্ষে তাদের যুক্তি ছিল, সঙ্গত কারণে এবং সচেতন ভাবেই এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনটুকু তারা করেছেন। এটা আসলে তাৎক্ষণিক একটা পরিবর্তন। তাদের পরবর্তী ছবিগুলোতে পুনরায় লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠকেই ফিরিয়ে আনা হবে। কার্যক্ষেত্রে হয়েছেও তাই।
এই ‘গেল গেল’ রব ওঠাটা নতুন কিছু নয়। এই রব আগেও উঠেছে। কিশোর কুমারের পরবর্তী সফল গায়ক হিসেবে কুমার শানু যখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন তখনও নিজেদের সনাতনী ভাবধারার মানুষ হিসেবে প্রতিপন্ন করতে চাওয়া কিছু পাবলিক ‘গেল গেল’ আওয়াজ তুলেছিল। কিন্তু বাস্তবে আমরা কী দেখলাম? কুমার শানু কিশোর কুমারকে অসম্মান তো করেনইনি উল্টে তাঁর বিজয় রথকে সফলতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নিজেকে একজন স্বতন্ত্র গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন।

কুমার শানু ও তাঁর আলাপ
“”””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””'”””””””””
হে…হে…হে…হে…
হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…
হো…ও…ও… আ…হা…হা…

দীবানা (১৯৯২) ছবির সেই বিখ্যাত গানটি শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কুমার শানুর কণ্ঠের বহুল জনপ্রিয় এই গানটির শুরুর দিককার এই আলাপ টুকুই গানটিতে একটি অদ্ভুত মায়াকাড়া আবেশ যোগ করেছে। আলাপটি শুরু হওয়ার সাথে সাথে শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলার অবশ্যম্ভাবী পরিণতির দিকে দূর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যায়। গানটি শেষ হয়ে গেলেও মস্তিষ্কের কোষে কোষে আলাপটির রেশ থেকে যায়।

১৯৯৪ সালে ‘দিলবালে’ নামে একটা হিন্দি ছবি এসেছিল যার প্রত্যেকটা গানেই কুমার শানুর এই জাতীয় আলাপের যথেচ্ছ ব্যবহার আমরা দেখতে পাই। এই ছবিরই একটা বিখ্যাত গান ‘কিতনা হসীন চেহেরা/কিতনি প্যায়ারি আঁখে…’ গানটির শুরুর দিকের ছবির নায়ক অজয় দেবগনের সেই শায়রী বলা—’ইয়ে আঁখে ইয়ে নূর…’ ব্যাকগ্রাউন্ডে ভেসে আসা কুমার শানুর বিখ্যাত আলাপ—

‘হো…হো…ও…ও…ও…
হে…হে…আ…আ…আ…আ…
হো…হো…ও…ও…ও…
হে…হে…আহ…হা…হা…’

এ এক অভূতপূর্ব প্রয়োগ শৈলীর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। শুধু মাত্র সেই কারণেই সিনেমার একটা অতি সাধারণ দৃশ্য দর্শককে এতটাই বিমোহিত করে ফেলে যে, মুহূর্তের জন্য সে ভুলে যায় এটা সেলুলয়েডে ধারণ করা একটা মনগড়া দৃশ্য মাত্র। বহুদূর কল্পনায় দর্শক অবধারিতভাবে রূপকথার কল্প রাজ্যে ঢুকে পড়ে। যার রেশ থেকে যায় দীর্ঘ সময় ধরে। গোটা ছবি জুড়ে কুমার শানুর আলাপ ছবির আবহ সংগীতকে আক্ষরিক অর্থেই ভীষণভাবে অর্থবহ করে তুলতে সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে সেকথা বলাই বাহুল্য।

এবারে যে গানটির কথা বলব, এই গানটি নিয়ে আজো বহু মানুষ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। স্মৃতির সরণী বেয়ে কখন যে অনেকগুলো বছর পিছনে চলে যান, খেয়াল থাকে না। ১৯৯৪ সালে রেকর্ড হওয়া কুমার শানুর গাওয়া সেই বিখ্যাত গান—
‘ইস তারহা আশিকী কা অসর ছোড় যায়ুঙ্গা…’
যার সুরকার ছিলেন অনু মালিক। গোটা নব্বই দশক জুড়ে অনু মালিক, কুমার শানু জুটি অসংখ্য ভালো গান আমাদের উপহার দিয়েছেন। এতদিন বাদে এসেও সেই সমস্ত গানগুলির ধারাবাহিক জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাঁটা পড়েনি। আজও তারা ভীষণ রকমের প্রাসঙ্গিক।
আলোচ্য গানটির প্রারম্ভিক আলাপ এই গানটিতে একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। কী ছিল সেই আলাপ সেটা আর একবার দেখে নেওয়া যাক—

এ…হে..
এ…এ…হে…
হে…হে…হে…হে…এ…হে…
আ…আ…
হুমম…হুমম…
হে…হে…আ…হা…

‘সাঁচি কহো হামসে তুমকো কিত না প্যায়ার হ্যায়…’
সাজান কি বাহো মে (১৯৯৫)। এই গানটির দুটি ভার্সন আছে। প্রথম ভার্সনটি দ্বৈত কণ্ঠে।
দ্বিতীয়টি স্যাড ভার্সন। এই দ্বিতীয় ভার্সনটিতে গানের শুরুতে ‘আলাপ’ রাখা হয়েছে। কুমার শানুর সুললিত কণ্ঠের আলাপ গানটিতে একটা আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। কেমন ছিল সেই আলাপ তার সাথে একটু আলাপ-পরিচয় করে নেওয়া যাক—

হে…হে…আ…হা…আ…ও…ও…ও ও…ও…ও’

মিঃ আশিক (১৯৯৬)। এই ছবিতে কুমার শানুর গাওয়া, ‘মেরা চান্দ মুঝে আয়া হ্যায় নজর…’ গানটির কথা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কালজয়ী একটি গান।
আমরা জানি, সংগীতের প্রধান চারটি উপাদান, বাণী, সুর, যন্ত্রাণুষঙ্গ ও গায়কি। সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার মেধা, জ্ঞান, দক্ষতা ও সৃজনশীলতার সমন্বয় ঘটলেই কেবল একটি গান সমৃদ্ধ হয়, হৃদয়গ্রাহী হয়, এবং সর্বোপরি কালোত্তীর্ণ হয়। অর্থাৎ একটি গানকে কালজয়ী তখনই বলা যায় যখন কয়েক যুগ পরেও গানটির আবেদন একই রকম থাকে । আলোচ্য গানটিও সেইরকমই একটি গান। কুমার শানুর গাওয়া সর্বকালের সেরা রোমান্টিক গানগুলির যদি তালিকা প্রস্তুত করা হয়, এই গানটি তালিকার শীর্ষে থাকবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

‘হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…
হে…হে…হে…
হুমম… হুমম… হুমম…’ হুমম…হুমম…

কুমার শানুর সুরেলা কণ্ঠের আলাপ দিয়ে গানটির শুরু। অনেক সময় হয় না, প্রথম আলাপেই কারো প্রতি ভালোবাসা জন্মে যায়। এই গানের আলাপটির ক্ষেত্রেও ঠিক একই কথা দারুণভাবে ফিট করে যায়। আলাপটি এতটাই মায়াকাড়া, আলাপটি শুনেই শুরুতেই গানটির প্রতি সয়ংক্রিয়ভাবে একটা ভালোলাগার জায়গা তৈরি হয়ে যায়।
এটা মূলত একটা সফট মেলোডি সং। চোখ বন্ধ করে গানটি শুনলে সত্যিই ভালোবাসার অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য অনুভব করা যায়।

১৯৯৪ সালের ‘দিলবালে’ ছবিটির বিরাট সাফল্যের পর ছবির নির্মাতারা ১৯৯৬ সালে পুনরায় অজয় দেবগনকে নায়ক করে আরো একটি ছবি বাজারে এনে ফেললেন। ছবির নামটাও ভারি অদ্ভুত—দিলজ্বলে। প্রথমে ‘দিলবালে’ তারপর ‘দিলজ্বলে’। এই ছবিটিতে কুমার শানু সর্বমোট তিনখানি গান গেয়েছিলেন। যার প্রতিটা গানই এককথায় অনবদ্য। তার মধ্যে একটি গান যেটি কুমার শানু একক কণ্ঠে গেয়েছিলেন। গানটি ছিল—’জিসকে আনে সে রঙ্গো মে ডুব গয়ি হ্যায় সাম…’। এই গানটিও একটি চমৎকার আলাপ দিয়ে শুরু হচ্ছে। আলাপের সুরটাও ভারি অদ্ভুত রকমের মায়াকাড়া। আমার ধারণা, এই আলাপটিতে অবসাদ ও ক্লান্তি নিবারণের এক অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে। বহু শ্রুত সেই আলাপটি আরো একবার শুনে নেওয়া যাক—

হে…হে…আ…হা…হা…হা…
হে…হে…আ…হা…হা…হা…

‘কভি যো ভুল না চাহু,
না জানে কিউ, মুঝে তুম ইয়াদ আতে হো….’
1997 সালের ছবি ‘নসীব’। গোবিন্দা অভিনীত এ ছবির সুরকার ছিলেন নদীম-শ্রবণ। এই ছবিতে কুমার শানুর গাওয়া একাধিক হিট গানের মধ্যে এই গানটি অন্যতম। অন্য গানগুলির মধ্যে থেকে নির্দিষ্ট করে এই গানটিকে বেছে নেওয়ার কারণ, এই গানটির প্রারম্ভিক আলাপ সমগ্র গানটিকে একটি সার্থক দুঃখের গান হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিতে সার্থক ভূমিকা নিয়েছে। বিরহের মাঝে আবেগ জাগানো এক হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গান।
মানুষ অভ্যাসের দাস। অভ্যাস ছাড়া কোন কাজ সে গুছিয়ে করতে পারে না। তার অনেক অভ্যাসের মধ্যে প্রেমে পড়াটাও একটা অভ্যাস। জগতের নিম্ন শ্রেণীর প্রাণীদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা ব্যাপারটা আছে কিনা আমার জানা নেই। কিন্তু জীবজগতের এই শ্রেষ্ঠ প্রাণীটির মধ্যে এটা ভীষণভাবে আছে। মানুষ শুধু মানুষের প্রেমে পড়ে না, সেই সাথে সে গোটা মানুষটাকে আত্মস্থ করে ফেলে। তার প্রতিটা পদক্ষেপ তার মুখস্থ হয়ে যায়। তারপর একদিন সেই ভালোবাসার মানুষটা শহরের কোলাহলে গা ভাসিয়ে দিয়ে হারিয়ে যায়। অথচ তাকে ভালোবাসার অভ্যাসটা থেকে যায়। বেদনার বালুচরে একাকী নিভৃতে হারিয়ে যাওয়া ভালবাসার সেই অভ্যাসের পালকগুলো ওড়াতে ওড়াতে প্রেমিক হয়তো এভাবেই অর্তনাদ করে—

হে…হে…হে…হে…
হো…হো…হো…হো…
হে…হে…হে…হে…
ও…ও…

‘কভি যো ভুল না চাহু,
না জানে কিউ, মুঝে তুম ইয়াদ আতে হো….মুঝে তুম ইয়াদ আতে হো…’

এই মুহূর্তে মনে পড়ে যাচ্ছে ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’- ছবির কুমার শানু অলকা ইয়ানিকের দ্বৈত কণ্ঠের বিখ্যাত গানটির কথা—’লড়কি বড়ি আনজানি হ্যায়…’
মূলত এটিই এই ছবির সবথেকে জনপ্রিয় গান। যতীন-ললিতের সুর করা এ ছবির সবক’টা গানই প্রবল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু নির্দিষ্ট করে এই গানটি নিয়ে শ্রোতাদের মধ্যে একধরনের বাড়তি আগ্রহ লক্ষ্য বরাবর লক্ষ্য করা গেছে। এখনও একটু কান পাতলেই কুমার শানু ও অলকা ইয়াগনিকের কণ্ঠের সেই জনপ্রিয় আলাপটি শুনতে পাওয়া যায়—

হে…হে…হে…হে…হে…হে…
লা…লা…লা…লা…লা…লা…লা…

‘জব প্যায়ার কিসিসে হোতা হ্যায় (১৯৯৮)’ ছবির সেই বিখ্যাত গানটির কথা উল্লেখ না করলে প্রতিবেদন অসমাপ্ত থেকে যায়। গানটির শুরুটা অনেকটা এইরকম—

এ…এ…এ…এ-ই…
এ…এ…এ…হে…এ-ই…
এ…এ…এ…এ…হে…
এ…এ…এ…এ-ই…

কুমার শানু এক্ষেত্রে তাঁর বহু পরিচিত আলাপের সাথে সাথে হুডলিংয়ের অনবদ্য মিশেল ঘটিয়েছেন। যা কিনা গানটিকে অবধারিতভাবে একটা অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক কালের সংগীতের পরিভাষায় যাকে বলে Yodeling Folsetto। এ বিষয়ে শানুদা’র মুখ থেকে শোনা যে, এই আলাপটি করার পূর্বে তাঁকে বিস্তর খাটাখাটনি করতে হয়েছে। ফাইনাল টেকের আগে তিনি দফায় দফায় চা খেয়ে গলাকে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি নিখুঁত ভাবে করার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। গানের প্রতি একজন গায়ক কতটা নিবেদিত প্রাণ হলে এই জাতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার রাস্তায় হাঁটেন! যে সময়টার কথা বলা হচ্ছে, সেই সময়টাতে দাঁড়িয়ে তাঁর তো নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার দায়বদ্ধতা থাকার কথা না; কিন্তু তিনি কুমার শানু। তার গোটা কেরিয়ার নিয়ে যদি পর্যালোচনা করা যায়, তাহলে দেখা যাবে, তিনি নিজেকে বারেবারে ভেঙে গড়েছেন। যে কারণে তাঁর গানগুলি বারংবার শোনা সত্বেও মুহূর্তের জন্য বিরক্তিকর একঘেঁয়ে মনে হয় না।

কহো না প্যায়ার হ্যায়। ২০০০ সালের একটি সুপার ডুপার হিট ছবি। এই ছবির মাধ্যমেই জনপ্রিয় নায়ক হৃতিক রোশনের প্রথম রূপালী পর্দায় মুখ দেখানো। বলাই বাহুল্য জীবনের প্রথম ছবির মধ্য দিয়েই এই দীর্ঘদেহী নায়ক বহু তরুণ-তরুণীর স্বপ্নের নায়ক বনে যান। এই ছবিতে কুমার শানুর সাকুল্যে একটি মাত্র গান—
‘চান্দ সিতারে ফুল অউর খুশবু…’

গানটি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। একক গানে কুমার শানু বরাররই নিজেকে হিন্দিতে যাকে বলে ‘তীসমার খাঁ’ প্রমাণ করেছেন। কথা হচ্ছিল গানের আলাপ নিয়ে। এই গানটিতে কুমার সেই বিখ্যাত আলাপ অডিও ক্যাসেট বা সিডিতে রিলিজ হওয়া গানটিতে যে আলাপটুকু শ্রোতারা শুনেছেন, এটি আদতে মূল আলাপের বুড়ি ছোঁয়া অংশ। মূল আলাপটি আরো খানিকটা দীর্ঘায়িত। ক্যাসেটে বা সিডিতে যেটুকু ছিল—

হুমম…হুমম…
হুমম…হুমম…হুমম…
হুমম…হুমম…হুমম…
হুমম…হুমম…

যদিও মূল আলাপটি অনেকটা এইরকম—

হে…হে…লা…লা…লা…লা… লা…লা…লা…লা…লা…লা…লা…লা..
হুমম…হুমম…হুমম…হুমম…হুমম… লা…লা…লা…লা…লা…লা…হো…হো…
হো…হো…হো…

২০০১ সালের আর একটি বিখ্যাত ছবি ‘এক রিস্তা’। সুনীল দর্শন প্রযোজিত এ ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন নদীম-শ্রবণ। লক্ষণীয় বিষয় হলো সুনীল দর্শনের বেশিরভাগ ছবিতেই আমরা এই জুটিকে সংগীত পরিচালক হিসেবে দেখতে পাই। সুনীল দর্শনের ছবিগুলোর একটা বৈশিষ্ট্য হলো, একটা সুন্দর নিটোল গল্প, সেই সাথে দারুণ দারুণ সব গান ছবিগুলোকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলত। ‘এক রিস্তা’ তেমনই একটা মিউজিক্যালি হিট ছবি। গোটা ছবি জুড়ে চমৎকার চমৎকার সব গান ব্যবহার করা হয়েছে।
‘আপকে আনে সে ঘর মে কিতনে রৌনক হ্যায়…হাম খুশ হয়ে…’ তেমনই একটা মিষ্টি গান। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন কুমার শানু, অলকা ইয়ানিক, মহঃ আজিজ ও সারিকা কাপুর। কুমার শানুর আলাপ দিয়ে গানের শুরু—

হে…হে…হে…হে…হে…
হে…
হে…হে…হে…
আ…আ…হা…

সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আলাপটি যত এগোতে থাকে গানটির প্রতি শ্রোতার আগ্রহ ততই বাড়তে থাকে। এমনও হয়েছে, অনেকেই শুধুমাত্র এই আলাপ টুকুই একাধিকবার ফিরে ফিরে শোনার লোভ সম্বরণ করতে পারেননি। এটাই কুমার শানুর আপাত দৃষ্টিতে সহজ সরল অথচ গভীর অর্থবহ আলাপের বৈশিষ্ট্য। যা শ্রোতাকে কোন এক দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে।

আন্দাজ (২০০৩) অক্ষয় কুমার অভিনীত ছবির প্রধান আকর্ষণী শক্তি এ ছবির গান। কোন দল বা সংগঠনের যেমন নেতা বা মাথা থাকে, যার প্রধান কাজটাই হলো দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া।
আন্দাজ ছবির সুরেলা গানগুলির মধ্যে কুমার শানুর গাওয়া—
‘কিসি সে তুম প্যায়ার করো…’ গানটার ভূমিকাও অনেকটা সেইরকমই।

হে… হে… হে…
হে…হে…হে…এ…
হে…হে…হে…
হে…হে…হে…হে…
হে…হে…
হে…হে…হে…
হে…হে…হে…এ….

এই বিখ্যাত আলাপটির শুধু মাত্র গানটির সাথে যুক্ত থেকেই তার দায়িত্ব শেষ হয়নি। বস্তুত গোটা ছবি জুড়ে ছবির আবহ সংগীতের একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হিসেবে আলাপটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে একটা কথা না বললে গোটা বিষয়টা অসমাপ্ত থেকে যায় যে, কুমার শানুর আপাত নিরীহ অথচ ভীষণভাবে কার্যকরী আলাপ গুলো শুধু যে তার গানের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তা কিন্তু নয়। এমন বেশ কিছু ছবি আছে, যে ছবিগুলোতে আলাপগুলি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা হয়েছে। অতএব একটা বলাই যায়, কুমার শানুর কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত আলাপ ছবির আবহ সংগীতকেও প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে।

কুমার শানুর আলাপ ও কিছু পুরনো স্মৃতি
“””'”””””””””””””'””””””‘””””””””””””””””””””””””””””””
আমার এক দূর সম্পর্কের কাকা ছিলেন। যিনি প্রায়শই একটা কথা বলতেন,’কুমার শানুই বোধহয় একমাত্র গায়ক যে কিনা শুধুমাত্র ‘হে…হে…হে….হা…হা…হা’ আলাপ দিয়েই বাজিমাত করে দিল।”
কম বয়সে কাকাবাবুর মুখ থেকে এই জাতীয় কথাবার্তা শুনে মুখে কিছু বলতাম না বটে, কিন্তু তাঁর প্রতি খুব রাগ হতো। মনে হতো, কাকাবাবু আগের দিনের মানুষ। এই জাতীয় মানুষগুলোর একটা অদ্ভুত প্রবণতা হলো, নতুন কোন কিছু সম্পর্কে এঁদের একধরনের ছ্যুঁৎমার্গ আছে। পুরনো যা কিছু সব ভালো, নতুন যুগের কোন কিছুই তার সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে না। এটা আসলেই একটা ভুল ধারণা। সেদিন আমার কেন জানি মনে হয়েছিল, কাকাবাবু আসলে কুমার শানুর ক্রমাগত ভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠাটাকেই বিদ্রুপ করছেন। পরে বুঝেছি, কাকাবাবুর বলা কথা গুলো আসলে কোনপ্রকারের সস্তা বিদ্রুপ ছিল না। এটা ছিল একজন প্রতিথযশা শিল্পীর অননুকরণীয় শৈলীকেই সম্মান জানানোর স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ।

উপসংহার
“””””””””””””””
কুমার শানু তাঁর গোটা কেরিয়ারে শুধু যে হিন্দি গানই গেয়েছেন তা নয়, এর বাইরে তাঁর নিজের মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও আরো অন্তত ২৪টি আঞ্চলিক ভাষায় তিনি গান গেয়েছেন।
সীমিত পরিসরে শানুদার সবক’টি গানের ‘আলাপ’ নিয়ে আলোচনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। শুধুমাত্র এই বিষয়ের উপরেই কেউ আস্ত একখানা বই লিখে ফেললে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এখানে যে গুটিকয়েক গান নিয়ে কথা হলো, এর বাইরেও এমন প্রচুর গানের কথা অনুচ্চারিত থেকে গেছে।
কুমার শানুর আলাপ সমৃদ্ধ জনপ্রিয় কিছু গানের তালিকা নীচে দিয়ে দেওয়া হলো—

১.সাঁসো কি জরুরত হ্যায় জ্যায়সে (আশিকী)

২.হামসে বদল গয়া বো নিগাহে তো ক্যায়া হুয়া (স্যার)

৩.ইয়ে মওসম কেহ রাহা হ্যায় (দিল নে ফির ইয়াদ কিয়া)

৪.উতরা না দিল মে কোয়ী ইস দিলরুবা কে বাদ (উফ ইয়ে মোহাব্বত)

৫.দিবানা তো কেহ দিয়া (সওদা)

৬.শুনো ইয়ার মেরে (সরহদ)

৭.তেরি মেরি জিন্দেগী (লালচি)

৮. কিতনা পাগল দিল হ্যায় (আন্দাজ)

৯. কোই তো সাথী চাহিয়ে চাহিয়ে (কসুর)

১০. মোহব্বত হো না যায়ে (কসুর)

১১. ঘুংঘট মে চান্দ হোগা আঁচল মে চান্দনী (খুবসুরত)

১২. জিস দিন সুরজ কি পেহলি কীরণ উতরি থি জমীন পর (স্যার)

১৩. ইয়ে উজলি চান্দনী যব (স্যার)

১৪. বরসাত কে দিন আয়ে মুলাকাত কে দিন আয়ে (বরসাত ২০০৫)

১৫.তুম মুঝে ইতনা প্যায়ার করো (আন্দাজ তেরা মস্তানা)

১৬. রাজু আওয়ারা বরসাত মে (গুণ্ডা মাওয়ালি)

১৭. জিন্দেগী কো বিনা প্যায়ার কোই ক্যায়সে গুজারে (হাঁ ম্যায়নে ভি প্যায়ার কিয়া হ্যায়)

১৮. অব ইহাঁ কোই নেহি (নজরানা-গজল)

১৯. জানে কাঁহা লেকে যায়ে জিন্দেগি (ড্রীমস্)

২০. সোনাল ও সোনাল তু কলিয়োঁ সে কোমল (গুলাল-গজল)

২১. সো গয়ি ইয়ে জমীন সো গয়া আসমান (কর্জ-টু বার্ডেন অফ ট্রুথ)

২২. মোহাব্বত হুই হ্যায় (কর্জ-টু বার্ডেন অফ ট্রুথ)
২৩. মেরি মেহবুবা হ্যায় তু (কর্জ দ্য বার্ডেন অফ ট্রুথ)
২৪. জানম তেরে লিয়ে রাত দিন (কুরুক্ষেত্র)

২৫. তুম হি সে তুম হি কো চুরা লেঙ্গে হাম (দুলারা)

২৬. সামনে ব্যায়ঠি রহো দিল কো কারার আয়েগা (নিশানা)

২৭. কোই ভি হসিনা ক্যায়া হ্যায় তেরে আগে (ইনসানিয়ত কে জঙ্গ)

২৮. তু সপনো কি তসবির (সাজান কে লিয়ে)

২৯. সনম মেরে হামরাজ (হামরাজ)

৩০. রাজু আওয়ারা বরসাত মে (গুণ্ডা মাওয়ালি)

৩১. স্বপ্ন রাঙানো এ মধু জোছনায় (আয়নাতে)

৩২. আমি চলতে গিয়ে হোঁচট খেলাম (তুমি আমার পৃথিবী-আধুনিক)

৩৩.ঘুম ঘুম চোখে চাইলো আকাশ (ফিরে এলাম-আধুনিক)

৩৪. অচেনা আকাশ (ফিরে এলাম-আধুনিক)

৩৫. সেই গোধূলি বেলা রঙেরই খেলা (জলসা ঘর-আধুনিক)

৩৬. জীবনের অঙ্কটা মেলে না কিছুতেই (স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা)

৩৭.ও আমার প্রাণের বাঁশরী (মধুর মিলন)

৩৮. দেখেছি তোমাকে ফুলেরই আসরে (ফুলের আসর—আধুনিক)

৩৯. মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ওই পাহাড়ে (গানে ভূবন ভরিয়ে দেবো)
৪০. সত্যি কি আমাকে বলো তুমি চাও (জীবন সাথী)

৪১. সব রাতে পূর্ণিমা হয় না (স্মৃতি তবু-আধুনিক)

৪২. ঘুম নেই জেগে আছি বাতায়ণে (তিল থেকে তাল)

৪৩. ও আকাশ আমি যদি মেঘ হতাম ( সিঁদুরের অধিকার)

৪৪. বাদা হ্যায় (সালাখেঁ-পাকিস্তানি মুভি)

৪৫. ক্যায়সে কেহ দু ও জানে জানা (তুম বিন-প্রাইভেট অ্যালবাম)

৪৬. . মাতা অবা রিসাওছুঁ বলদি বলদি ন’ (স্বর্গ- নেপালী চলচ্চিত্র)

৪৭. সংগাই জিউনি সংগাই মরনে (লহর- নেপালী গীত)
৪৮. ফুলোতিএ দাবু কহি (তো ভালা পাইবা সেতিকি থাউ- উড়িয়া মর্ডান)

৪৯. সুমহতপা হেল্লিনে নাহাকি নুংশি সকতমনা ( নংজু আহিং- মনিপুরী চলচ্চিত্র)

৫০. প্যায়ার হামারা হো গইল বা তোহ সে সাজন (লড়ব মরতে দম তক- ভোজপুরি চলচ্চিত্র)

৫১. জিতা থা জিসকে লিয়ে (দিলবালে)

৫২. মিল জাতে হ্যায় যো প্যায়ার মে (আরজু)

৫৩. তুম দিল কি ধড়কন মে রহতে হো (ধড়কন)

৫৪. কসম সে কসম সে আশিকী হ্যায় তুমসে (দো আঁখে বারা হাথ)

৫৫. বো লড়কি বহুত ইয়াদ আতি হ্যায় (কয়ামত)

Developed by