এইকাল নিউজ: স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রতীক বিধানসভার পরিষদীয় সচিব তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক আবারও একবার উন্নয়নের স্বার্থে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিলেন।হালিশহরের 17 নম্বর ওয়ার্ডে সার্বিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিতে এই ওয়ার্ডের জননেতা শম্ভুনাথ (বাপী) ঘোষের উপর আস্থা রাখলেন পার্থ ভৌমিক। গত রবিবার জনতার দরবারে অনুষ্ঠান আয়োজনের সার্বিক দায়িত্ব অর্পণ করা হল স্থানীয় পদক্ষেপ ক্লাবের কর্মকর্তা তথা সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য বাপী ঘোষের উপর। শুধু তাই নয় এই জনতার দরবারে অনুষ্ঠানের আহবায়ক হালিশহরের মুখ্য পুরপ্রশাষক রাজু সাহানী নিজেও তাঁর জনতার দরবারে রাখা বক্তব্যে একাধিকবার সিপিএম এর দুবারের এই প্রাক্তন কাউন্সিলরের উপর আস্থা রাখেন। ভবিষ্যতে এই 17 নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রেও প্রাক্তন কাউন্সিলর বাপী ঘোষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, হালিশহরের এই 17 নম্বর ওয়ার্ডটি বহুদিন ধরেই অনুন্নয়নের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। 2015 সালের পুরভোটে এই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী বন্ধুগোপাল সাহা জয়ী হন। সেই সময় এই জয়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তৃণমূল নেতা সুভাষ রাহা। কিন্তু কাউন্সিলর হিসাবে এলাকার কোনো উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতেই আর তাঁকে দেখা যায়নি। 2019 সালে বন্ধুগোপাল বিজেপিতে যোগ দেন। সব মিলিয়ে একদিকে অযোগ্য জনপ্রতিনিধি আর দলীয় কোন্দলের কারনে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত থেকে যায় 17 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গোটা প্রসাদনগর এলাকা। অথচ এই ওয়ার্ডের দুবারের কাউন্সিলর সিপিএমের বাপী ঘোষের আমলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন তরান্বিত হয়েছিল। পরবর্তীতে পদে না থাকলেও এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারনে প্রসাদনগর এলাকায় বাপী ঘোষ দলমত নির্বিশেষে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। লকডাউনে খাবার বিলি থেকে রক্তদান কিংবা এলাকার ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা সবেতেই বাপী ঘোষ এলাকায় প্রচারের আড়ালে থেকেই কাজ করেন। আর এই গোটা বিষয়টাই নজর এড়ায়নি তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের। বেহাল রাস্তাঘাট থেকে বেহাল নিকাশি সব কিছুতেই নজরকাড়া এই প্রসাদনগর এলাকা। কয়েকমাস আগে এই ওয়ার্ডে দিদিকে বলো কর্মসূচিতে এই ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন হালিশহর পুরপ্রশাষক মন্ডলীর সদস্য প্রণব লোহ। এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখে রীতিমত বেগ পেতে হয় প্রণব লোহ কে। বেহাল রাস্তা ও নিকাশির সেই সমস্যা দূর করতে সম্প্রতি তৎপর হন সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত হালিশহরের পুর প্রশাসক রাজু সাহানি। রাস্তাঘাট ও ড্রেন তৈরির কাজে গতি আসে। আর এবার এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নকে তরান্বিত করতে সাধারণ মানুষের মুখ থেকে তাদের সমস্যা শুনে তা প্রতিকারের জন্য আয়োজিত হল জনতার দরবার। আর এই উন্নয়নমূলক কর্মসূচির রূপায়ণে দলের ঊর্ধে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিলেন হালিশহরের পুরপ্রশাষক রাজু সাহানি। আর এই গোটা কর্মসূচিটি যার মস্তিষ্কপোষিত তিনি হলেন বিধায়ক পার্থ ভৌমিক।পার্থ ভৌমিক বলেন উন্নয়নের প্রশ্নে মানুষের স্বার্থে রাজনীতির ঊর্ধে উঠে কাজ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি রামকৃষ্ণ মোড়ের নতুন বড়দা ব্রিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, এই ব্রিজ তৈরির ক্ষেত্রে 109 টি পরিবারকে পুনর্বাসন দিয়ে আমরা কর্মসূচি রূপায়ন করেছিলাম। আর এই কাজ করতে গিয়ে ডেভেলপমেন্ট কমিটি তৈরি করেছিলাম। তার দায়িত্ব দিয়েছিলাম সিপিএম নেতা অঞ্জন দাসগুপ্তকে। যিনি 2011 সালে আমার ভোটে সিপিএমের প্রধান শক্তিশালী নেতা ছিলেন। কিন্তু আমি উন্নয়নের প্রশ্নে তাকে পাশে নিয়েই কমিটি করেছিলাম। এটাই আমার রাজনৈতিক শিক্ষা। কারন সবার উপর মানুষ সত্য।তবে এদিনের জনতার দরবারে অনুষ্ঠানে দেখাগেল স্থানীয় উৎসাহী বাসিন্দাদের উপচেপড়া ভিড়। এলাকার মানুষ তাদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে সোচ্চার হয়ে জানায়। পুরপ্রশাসকের নির্দেশে সব সমস্যার কথা লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রশাসক সাহানি কথা দেন দ্রুত যতটা সম্ভব সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।