এইকাল নিউজ:
মেয়াদ উত্তীর্ণ রাজ্যের ১০৮টি পুরবোর্ডের প্রশাসককে অপসারনের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সকাল ১০ টার মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে বলেও মুখ্যসচিবকে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।
শনিবার রাতে কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিধানসভা ভোটের সময় মেয়াদ উত্তরটি পুর বোর্ডগুলোর প্রশাসক পদে থাকতে পারবেন না কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যের১০৩টি পুরসভা এবং কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি সহ ৫টি পুরনিগম। ফলে কলকাতার মুখ্য পুর প্রশাসক পদ থেকে সরতে হবে ফিরহাদ হাকিমকে। একই ভাবে শিলিগুড়ি পুরনিগমের মুখ্য পুর প্রশাসক পদ থেকে সরতে হবে অশোক ভট্টাচার্যকেও। উল্লেখ্য, দুজনেই আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রার্থী।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে প্রস্তুতি নিয়েও রাজ্যের ১০৩টি পুরসভা ও পাঁচটি কর্পোরেশনে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করতে পারেনি রাজ্য। সেই পুরসভা ও পুরনিগমগুলির চেয়ারম্যান বা নির্বাচিত মেয়রদেরকেই সেই সময় আপদকালীন ভাবে মনোনীত প্রশাসক নিয়োগ করে নবান্ন। দিন কয়েক আগে নির্বাচন কমিশনে কলকাতা কর্পোরেশন ও পুরসভাগুলির প্রশাসকদের নিয়ে অভিযোগ করে বিজেপি। অভিযোগ ছিল, মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়োগ করে ব-কলমে ফায়দা তুলছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন নির্দেশে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলিতে প্রশাসক হিসাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যুক্ত থাকলে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে ভোটারের মনে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। তাই নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকাকালীন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ অর্থাৎ ভোটে কেউ যাতে প্রশাসনিক কোনও পদে থেকে বাড়তি সুবিধা না নিতে পারে সে কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হল। কমিশনের নির্দেশ, আদর্শ নির্বাচনী আচরনবিধি জারি থাকাকালীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সরিয়ে ওই পদে সরকারি আধিকারিকদের নিয়োগ করতে হবে। এজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই কমিটিতে থাকবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব ও কর্মীবর্গ দফতরের প্রধান সচিব। এই তিন সদস্যর কমিটি পুরসভাগুলিতে প্রশাসক হিসাবে সরকারি আধিকারিকদের নিয়োগ দেবেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, কমিশনের নির্দেশ মেনে ২ মে পর্যন্ত ১০৩টি পুরসভা ও পাঁচটি কর্পোরেশনেই রাজনৈতিক ব্যক্তিরা প্রশাসক থাকতে পারবেন না। এমনকী, নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না, অথচ রাজনৈতিক ব্যক্তি এমন ‘বোর্ড অব চেয়ারম্যান’ কেউই কোনও পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যও থাকতে পারবেন না। যদিও পানিহাটির নির্মল ঘোষের মতো অনেক পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ইতিমধ্যে ইস্তফা দিয়েছেন। রাজ্য সরকার সেখানে অফিসারকে প্রশাসক নিয়োগ করেছেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে আগামী সপ্তাহে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে ফিরহাদ হাকিম ও অতীন ঘোষ ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই বিজেপির অভিযোগের জেরে কমিশনের নির্দেশে সরে যেতে হচ্ছে।
কমিশনের এই নির্দেশের পর তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এবার তাহলে পুরসভাগুলির উন্নয়ন ও নাগরিক পরিষেবার দায়িত্ব নিক কমিশন।’ তবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য।