শোভনলাল রাহা, এইকাল নিউজ:
বিধানচন্দ্র রায়, জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরী হিসাবে বঙ্গ রাজনীতিতে রাজনৈতিক সৌজন্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে বুধবার বিকেলে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে গেলেন তৃণমূলের রাজ্য যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণা রায় কোভিডে আক্রান্ত। তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছেন। সেই খবর পেয়েই এদিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক। শুধু তাই নয়, মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। যা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। কারণ, দিন কয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভ্রাংশুর একটি পোস্ট ঘিরে সোরগোল পড়ে যায়। যেখানে বীজপুরের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক জনগনের রায়ে নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা করার আগে আত্মসমালোচনার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর ওই পোস্ট ঘিরে বিস্তর চর্চাও হয়। এরই মধ্যে এদিনের এই ঘটনা তাই নতুন করে জল্পনা উসকে দেয় রাজনৈতিক মহলে। যদিও শুভ্রাংশু ও অভিষেক, দুজনই এই ঘটনাকে ‘সৌজন্য’ বলেই দাবি করেছেন।
সূত্রের খবর, কৃষ্ণা দেবীর অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি অভিষেক মায়ের শারীরিক বিভিন্ন খুঁটিনাটির খোঁজ নেন ছেলে শুভ্রাংশুর থেকেও। তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘শক্ত থাকো, পাশে আছি। যে কোনো সাহায্য লাগলে বলবে, সব সময় পাশে পাবে।’ যদিও, এই অভিষেক যখন হাসপাতালে কৃষ্ণা দেবীকে দেখতে আসেন, সেই সময় ছিলেন না মুকুল রায়।
বছর তিনেক আগের ঘটনা।হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন শুভ্রাংশু। তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সেই সময় মুকুলবাবু বিজেপিতে ছিলেন। শুভ্রাংশু ছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক। সেদিন তাঁকে দেখতেও হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুলবাবু সেদিন হাসপাতালে ছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে মমতার দেখা হয়নি। কেবল শুভ্রাংশুর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের সেদিন দেখা ও কথা হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য মুকুল রায় ও তার পরিবার যে তৃণমূল নেত্রীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ তা এর আগেও প্রমাণিত।
গত ৩ সপ্তাহ ধরেই করোনায় আক্রান্ত মুকুল রায়ের স্ত্রী। এদিন সন্ধ্যে ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকদের থেকে মুকুলপত্নীর শারীরিক অবস্থার খোঁজও নেন তিনি। এরপর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তৃণমূল সাংসদ।
মুকুলবাবুও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনি আপাতত অনেকটাই সুস্থ হয়ে তাঁর কাঁচড়াপাড়ার বাড়িতে ফিরেছেন। এদিন অভিষেক যখন হাসপাতালে যান, তখন মুকুলবাবু সেখানে ছিলেন না।