শোভনলাল রাহা, এইকাল নিউজ:
শেষ কথা ‘দিদিই’ বললেন। মমতা ছাড়া সব শীর্ষপদ আপাতত অবলুপ্ত তৃণমূলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ-সহ সর্বভারতীয় তৃণমূলের যাবতীয় পদ অবলুপ্ত করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন আপাতত শুধু ২০ জনের জাতীয় কর্মসমিতি তৈরি করা হয়েছে।
মমতা বন্দোপাধ্যায় রয়েছেন মাথায়। বাকি ১৯ জন হলেন অমিত মিত্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, যশবন্ত সিনহা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শুখেন্দুশেখর রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, গৌতম দেব, অনুব্রত মণ্ডল, মলয় ঘটক, বুলুচিক বরাইক, রাজিব ত্রিপাঠী, অসীমা পাত্র।
প্রসঙ্গত গত ২ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচন হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতভাবে দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শনিবার অভিষেক সহ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে বৈঠক করেন মমতা। বৈঠকে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য,সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, দলের সব সর্বভারতীয় শীর্ষ পদ এর অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়ার পার্সন হিসেবে থাকবেন। কাকে কোন পদ দেওয়া হবে, তা পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিক করবেন।
রাজনৈতিক মহলের খবর, দলীয় ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই তিনি জরুরি বৈঠক ডাকেন কালীঘাটে। সূত্রের খবর, কারও নাম না করে নেত্রী বলেছেন, “দলের সম্মান সবার ঊর্ধ্বে। যে বা যাঁরা সেই সম্মান নষ্ট করেছেন, তাঁরা অন্যায় করেছেন।” একই সঙ্গে এক ব্যক্তি এক পদ জাতীয় কোনও নীতি যে দলের তরফে নেওয়া হয়নি, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন নেত্রী।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর ছাত্র-যুব নেতৃত্বের নির্দিষ্ট অংশের জন্যই এই কড়া বার্তা দিলেন নেত্রী। যে ১৯ জনকে নিয়ে নতুন কমিটি করা হল তাতে বয়সের কোনও সীমা তৃণমূল নেত্রী রাখেননি। একইভাবে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ বিষয়টিও আমল পায়নি। যাঁরা জাতীয় কর্মসমিতিতে এলেন, তাঁরা প্রায় সকলেই দলের পুরোনো মুখ। অর্থাৎ মমতার ঘনিষ্ঠ বৃত্তের। কমিটির বিন্যাসে উল্লেখযোগ্য দু’টি নাম অমিত মিত্র ও যশবন্ত সিনহা। সূত্রের খবর, সাংগঠনিক পদে অমিত মিত্রকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হতে পারে। একইভাবে দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহাকেও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হতে পারে বলে খবর। বিধানসভা নির্বাচনের পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এককভাবে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে এই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সূত্রের খবর। যদি তাই হয় তবে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এর ‘একক ক্ষমতা’ ভাগ হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, এই সাধারণ সম্পাদকের পদে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীর নাম বিবেচনায় রয়েছে। উল্লেখ্য, এই পদে দলের ঊষালগ্ন থেকে দীর্ঘ সময় এককভাবে ছিলেন মুকুল রায়।