শোভনলাল রাহা, নৈহাটি:

জনস্বার্থে পুলিশের পরিষেবাকে আরও নিবিড় করতে উদ্যোগী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই
ব্যারাকপুর কমিশনারেটকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। বুধবার নৈহাটি মাছ বাজার এলাকায় শিবদাসপুর থানার উদ্বোধন করতে এসে জনস্বার্থে পুলিশ প্রশাসনকে নতুন ধাঁচে গড়ে তোলার জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানালেন পুলিশ কমিশনার।

পুলিশ কমিশনারেটের লোকসংখ্যা এবং আয়তনের কথা মাথায় রেখে গত বছর নতুন আটটি থানা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত আকারে সেই প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। সেই উদ্যোগে সিলমোহর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় নতুন থানা তৈরির কাজ। ইতিমধ্যেই চলতি মাসে তিনটি থানা উদ্বোধন হয়ে গিয়েছিল। বুধবার নৈহাটি থানা ভেঙে তৈরি হল শিবদাসপুর থানা এবং বীজপুর থানা ভেঙে তৈরি হল জেঠিয়া থানা। বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হবে বাসুদেবপুর থানাটিও। জগদ্দল ও ভাটপাড়া থানার গ্রামীন এলাকা নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই বাসুদেবপুর থানা।

পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা আরও জানালেন, কিছুদিনের মধ্যেই বীজপুর থানা এলাকার হালিশহর পৌরসভার ২৩টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি হতে চলেছে হালিশহর থানা। এছাড়া টিটাগড় থানার অন্তর্গত মোহনপুর ও শিউলি পঞ্চায়েত মিলিয়ে তৈরি হতে চলেছে মোহনপুর থানা।
ইতিপূর্বেই বেলঘরিয়া থানা ভেঙে চালু হয়েছে দক্ষিণেশ্বর ও কামারহাটি থানা। দমদম থানা ভেঙে চালু হয়েছে নাগেরবাজার থানা।

নতুন আটটি থানার বাইরেও তৈরি হতে চলেছে তিনটি আউটপোস্ট বা ফাঁড়ি। বারুইপাড়া, আটজলা বাগান ও গোলঘরে এই নতুন ফাঁড়ি গুলি তৈরি হবে। নতুন এই আটটি থানা ও তিনটি ফাঁড়ির কথা মাথায় রেখে আটটি নতুন অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) পোস্ট তৈরি করা হয়ছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার। প্রায় সব মিলিয়ে এক হাজার নতুন পোস্ট অনুমোদন পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এতদিন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সব থানা গুলি ছিল গঙ্গার ধারে। এবার ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে নতুন থানাগুলির বেশিরভাগই হাই রোডের ধারে গড়ে তোলা হবে।
এদিন শিবদাসপুর থানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “প্রশাসনের কাজের পরিধি এখন অনেক বেড়েছে। জনস্বার্থে পুলিশ কাজ করার পরেও সুযোগ পেলেই একদল মানুষ রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে চলে। অথচ এই পুলিশ দিনরাত আমাদের পরিষেবা দিতে তৎপর থাকে।”
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী, জয়েন্ট সিপি (হেডকোয়ার্টার) ধ্রুবজ্যোতি দে, জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) অজয় ঠাকুর সহ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সুশ্বেতা ভট্টাচার্য।