এইকাল নিউজ:

স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) পরিষেবায় হয়রানি আটকাতে এবার স্বাস্থ্যভবনে পরামর্শদাতা তথা অ্যাডভাইজার নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার সুতীর্থ ভট্টাচার্যকে বসানো হচ্ছে ওই পদে।
এমনিতে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে জেলায় জেলায় বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
কখনও স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে রোগী ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে হাসপাতাল গুলির অনীহা, কখনও ভর্তি নিয়ে ইচ্ছেমতো বিল দেখানো, কখনও আবার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে ভর্তি নিয়েও টাকা নেওয়ার অভিযোগ—একএক জায়গায় একএক রকম অভিযোগ। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বেসরকারি হাসপাতাল গুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। কখনও বলেছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিত্সা না দিলে সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কখনও বলেছেন দরকারে লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরও ছবিটা সেই ভাবে বদলায়নি।
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নিজেও বেসরকারি হাসপাতাল গুলির সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন। পইপই করে তাদের বলেছেন, স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) কার্ডে চিকিত্সা দিতেই হবে। শুধু তাই নয়, এই কার্ডে চিকিত্সার জন্য বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে প্যাকেজও তৈরি করে দিয়েছিল নবান্ন।
কিন্তু তারপরও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে (Swasthya Sathi) চিকিত্সা পেতে কাল ঘাম ছুটেছে রোগীর। বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের পরিবারকে।
এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে চিকিত্সা না দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাঁদের জরিমানা করবে সরকার। সূত্রের খবর, বেশ কিছু হাসপাতালকে ইতিমধ্যেই মোটা টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে সরকারিভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি যে, কোন হাসপাতালকে কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে এবার অন্য রকম দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছে নবান্ন। সূত্রের খবর, ক’দিন আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব একটি বৈঠক করেন জেলাশাসকদের সঙ্গে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মুর্শিদাবাদ থেকে একটা অভিযোগ এসেছে। একটি সরকারি হাসপাতালে রোগী গেলেই তাদের নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে ডাক্তাররা এটা করছেন তাঁরাই সেই নির্দিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে যুক্ত। এখানেই বড় দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে নবান্ন। মনে করা হচ্ছে ওই বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ওই রোগীদের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে চিকিত্সা দিয়ে বিল বাড়িয়ে মুনাফা লাভের চেষ্টা চলছে। শুধু মুর্শিদাবাদ নয় এই প্রবণতা নাকি অন্য জেলায়ও দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে।
এই অবস্থায় এবার শুধু স্বাস্থ্যসাথী স্কিম দেখভালের জন্য এক অবসরপ্রাপ্ত আইএএসকে স্বাস্থ্যভবনে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করছে রাজ্য। এখন দেখার অবসরপ্রাপ্ত আইএএস সুতীর্থ ভট্টাচার্য যোগ দিয়ে এই পরিষেবা কতটা সচল করতে পারেন।