হালিশহরে পুরপ্রধানের পদত্যাগ, নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন শুভঙ্কর ঘোষ
শোভনলাল রাহা, এইকাল নিউজ:
তৃণমূলের দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বুধবার হালিশহরের পুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজু সাহানি। এদিনই দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে হালিশহর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে নতুন পুরপ্রধান কে হবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জানা যায়, নতুন পুরপ্রধান পদে শপথ নিতে চলেছেন হালিশহর পুরসভার বর্তমান উপ-পুরপ্রধান শুভঙ্কর ঘোষ। অন্যদিকে, হালিশহর পুরসভার উপ পুরপ্রধান পদে স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছেন বর্তমান পুরপ্রধান পার্ষদ হিমানীশ ভট্টাচার্য।

এদিন দুপুরে হালিশহর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, তৃণমূলের ব্যারাকপুর দমদম জেলা সভাপতি, বিধায়ক তাপস রায়, রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, স্থানীয় বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ও হালিশহরের সমস্ত কাউন্সিলর। সেখানেই বৈঠকের শুরুতেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে পদ থেকে ইস্তফাপত্র দেন রাজু সাহানি।
প্রসঙ্গত, রাজু সাহানি চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক মাস জেল হেফাজতে ছিলেন। তিনি ফিরে আসার পরেও পুরপ্রধানের চেয়ারে আর বসেননি। বিরোধীরা এই বিষয় নিয়ে বারবার সরব ছিল। অভিযোগ ছিল , অর্থনৈতিক তছরূপের অভিযোগে অভিযুক্ত রাজু সাহানিকে কেন এখনও পুরপ্রধান পদে রেখে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিষয় নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্রমশ অস্বস্তি দানা বাঁধছিল। তাই দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই এহেন সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

শুভঙ্কর ঘোষ ২০২২ সালে হালিশহর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে উপপুরপ্রধান নিযুক্ত হয়েছিলেন। পুরপ্রধান রাজু সাহানি জেলে যাবার পর থেকে উপপুরপ্রধান শুভঙ্করই কার্যত পুরসভার সমস্ত প্রশাসনিক কাজ সামলাচ্ছিলেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা শুভঙ্কর ঘোষ দলের দুর্দিনেও তৃণমূলের বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন। দল তারই পুরস্কার স্বরূপ পুরপ্রধান পদে এবার শুভঙ্কর ঘোষকে জায়গা করে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন প্রশ্ন একটাই, হিমানীশ ভট্টাচার্য উপ-পুরপ্রধান পদে স্থলাভিষিক্ত হলে একটি সিআইসি পদ খালি হবে। নতুন সিআইসি হিসাবে কার নাম উঠে আসবে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। হালিশহর পৌরসভার সিআইসি হিসাবে বাকিদের মধ্যে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে একমাত্র ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্ভুনাথ ঘোষের। কিন্তু শম্ভুনাথ ওরফে বাপি ঘোষ এর ক্ষেত্রে মাইনাস পয়েন্ট একটাই। তিনি সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। বাম জামানায় তিনি দুবারের কাউন্সিলর ছিলেন। ছিলেন সিপিএমের হেভি ওয়েট নেতাও। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর ডাকে সাড়া দিয়ে উন্নয়নের স্বার্থে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে প্রবীর সরকারের নাম। প্রবীর সরকার দুর্দিনের তৃণমূল কর্মী। বর্তমানে তিনি হালিশহর টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও। শেষ পর্যন্ত কাকে দেয়া হয় সিআইসি পদ তা জানা যাবে এক সপ্তাহ পর।
